Recents in Beach

কাজা নামাজ যেভাবে আদায় করতে হয়


নামাজ আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক ধার্যকৃত ফরজ ইবাদত। প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) বলেছেন, ইসলাম এবং কুফরির মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত হচ্ছে নামাজ। তাইতো তিনি আরও বলেছেন, ইচ্ছাকৃত ভাবে নামাজ ছেড়ে দেয়া কুফরি।

কাজা নামাজ কি: নামাজের যথা সময়ে আদায়ের ব্যাপারে প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) কর্তৃক এত সতর্কতা ও ফজিলত বর্ণনার পরও বিভিন্ন করণে মানুষের নামাজ ছুটে যায়। করাণবশত যথা সময়ে নামাজ পড়তে না পারলে ওই নামাজ অন্য নামাজের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে আদায় করাকে ‘কাজা’ নামাজ বলে।

কোন নামাজের কাজা আদায় করতে হয়: ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে, সে নামাজের কাজা আদায় করা আবশ্যক। সুন্নত কিংবা নফল নামাজ ছুটে গেলে তার  কাজা নামাজ আদায় করতে হয় না।

নামাজ সম্পর্কিত আল্লাহর বাণী: আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘নামাজ মুমিনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা ফরজ। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)।

নামাজ সম্পর্কিত কিছু হাদিস্:
১) ওজর ব্যতীত নামাজ সময় থেকে দেরি করে পড়া জায়েজ নেই। (বুখারি, হাদিস:৪৯৬)

২) কোনো ওজর বা অপারগতার কারণে নামাজ সময়মতো আদায় করতে না পারলে উক্ত অপারগতা শেষ হওয়ার পর ওই নামাজের কাজা আদায় করা ফরজ। (বুখারি, হাদিস:৫৬২)

৩) ফরজ নামাজের কাজা আদায় করা ফরজ আর ওয়াজিব নামাজের কাজা আদায় করা ওয়াজিব। (বুখারি, হাদিস:১৮১৬)

কাজা নামাজের প্রকারভেদ: নামাজের কাজা আদায়ের সুবিধার্থে ফউত হওয়া নামাজকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা: ১) ফাওয়ায়েতে কালিল। এবং ২) ফাওয়ায়েতে কাছির।

১)ফাওয়ায়েতে কালিল: পাঁপ ওয়াক্তের কম নামাজ ছুটে যাওয়া। এ অল্পসংখ্যক ছুটে যাওয়া নামাজকে ফাওয়ায়েতে কালিল বা অল্প কাজা নামাজ বলে।

২) ফাওয়ায়েতে কাছির: বেশি ওয়াক্ত নামাজ ছুটে যাওয়া। পাঁচ ওয়াক্তের অধিক নামাজ ছুটে যাওয়া। তা যত দিনের নামাজই হোক না কেন তাকে ফাওয়ায়েতে কাছির বা অধিক কাজা বলা হয়।

কম-বেশি উভয় নামাজের কাজা আদায়ের নিয়ম: পাঁচ ওয়াক্তের কম তথা অল্প কাজা নামাজ ওয়াক্তিয়া (প্রত্যেক ওয়াক্তের) নামাজের ধারাবাহিকতায় ঐ ওয়াক্তের নামাজের সঙ্গে আদায় করা। আর পাঁচ ওয়াক্তের বেশি তথা ফাওয়ায়েতে কাছির বা বেশি নামাজের কাজা প্রেত্যেক ওয়াক্ত নামাজের আগে পড়া।

কাজা নামাজ আদায়ে যে বিষয় গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে:
১) নামাজের কাজা আদায়ের কথা ভুলে গেলে।

২)নির্ধারিত ওয়াক্তের নামাজের সময় সংকীর্ণ হলে।

৩) নামাজের কাজা পাঁচ ওয়াক্তের বেশি হলে ঐ নামাজের কাজা পরেও পড়া যাবে।

৪) পাঁচ ওয়াক্ত বা তার কম ওয়াক্তের নামাজ ছুটে গেলে তা ধারাবাহিক ভাবে কাজা আদায় করতে হবে। আগের নামাজ আগে, পরের নামাজ পরে পড়তে হবে। যেমন: কোনো ব্যাক্তির ফজর এবং জোহরের নামাজ ছুটে গেলে, আছরের নামাজ আদায়ের পূর্বে প্রথমে ফজরের নামাজ কাজা আদায় করবে। অতপর, জোহরের নামাজ কাজা আদায় করবে। তারপর, আছরের ওয়াক্তিয়া নামাজ আদায় করবে।

কাজা নামাজ আদায়ে জানা থাকা আবশ্যক যে:
১) ফরজ নামাজের কাজা আদায় করা ফরজ।

২) ওয়াজিব নামাজের কাজা আদায় করা ওয়াজিব।

৩) আর সুন্নাত নামাজের কাজা পড়তে হয় না। কিন্তু! ফজরের সুন্নাত নামাজের কাজা আদায় করতে হবে। কাজা আদায়ের সময় হলো জোহরের নামাজের আগ পর্যন্ত। যদি জোহরের ওয়াক্ত হয়ে যায় তবে তা আর পড়তে হবে না।

৪) নামাজের কাজা যদি জামা-আতের সাথে আদায় করে তবে ইমাম ক্বেরাআত জোরে পড়বে। তবে, জোহর এবং আছরের ক্বেরাআত চুপে চুপে পড়বে।

৫) এক মাস বা তার চেয়েও বেশি দিনের নামাজের কাজা হয়ে থাকলে এ নামাজের কাজা নির্ধারিত ওয়াক্তের সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আদায় করতে হবে।

৬) জীবনে যে ব্যক্তি কোনো দিন নামাজই পড়ে নাই বা কত ওয়াক্ত নামাজ ছুটে গেছে ্সেই হিসাবও নেই,ঐ ব্যক্তি যখন ছুটে যাওয়া নামাজের কাজা আদায় করতে চায়। তখন সে ব্যক্তি প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের সাথে সাথে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের কাজা আদায় করতে থাকবে। এভাবে নামাজ আদায় করা কে ওমরি কাজা বলে। এভাবে নামাজের কাজা আদায়ে রয়েছে অনেক সাওয়াব।

বি:দ্র: পোস্ট টি যদি সঠিক মনে হয়, তাহলে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments