সৎ ও ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। আর মন্দ স্বপ্ন বা খারাপ স্বপ্ন আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই যখন কেউ পছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন এমন লোকের কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে।
স্বপ্ন দেখা মানুষের নিয়মিত একটি বিষয়। ঘুমের ভেতরে প্রতিরাতে সবাই কমবেশি স্বপ্ন দেখে থাকেন। কারো মনে থাকে কেউ বা ভুলে যান। এসব স্বপ্নের একেকটা হয় একেক রকমের। ভালো স্বপ্ন যেমন আছে আবার খারাপ বা দুঃস্বপ্ন ও আমরা দেখে থাকি।
কোনো সময় এমন ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখি আমরা যার কারণে অন্তরাত্মা কেপে উঠে। ভালো স্বপ্নতো সুন্দর ভবিষ্যতের লক্ষণ কিন্তু! এমন খারাপ আর ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখার পর রাসূল (সাঃ) ৫টি কাজ করতে বলেছেন।
স্বপ্ন বিষয়ক একটি হাদিস: আবু কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, ভাল ও সুন্দর স্বপ্ন আশে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে আর দুঃস্বপ্ন বা খারাপ স্বপ্ন আশে সয়তানের পক্ষ থেকে। যদি কেউ ভাল স্বপ্ন েদেখে, তাহলে তা শুধু তাকেই বলবে, যে তাকে ভালোবাসে বা তার ভালো কিছু চায়। অন্য কাউকে বলবে না, যে তার খারাপ চায়।
আর কেউ যদি স্বপ্নে খারাপ কিছু দেখে, তখন! ঘুম থেকে জাগার পরপর শয়তান থেকে আল্লাহ তা’আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম বলবে) এবং বাম দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করবে। আর কারো কাছে স্বপ্নের কথা বলবে না। এমনটি করলে সেই স্বপ্ন কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারি ও মুসলিম)।
দুঃস্বপ্ন দেখলে যা করবেন:
১) দুঃস্বপ্নের ক্ষতি ও অনিষ্ট থেকে আল্লাহ তা’আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এভাবে সকল প্রকার ক্ষতি থেকে আল্লাহ তা’আলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত।
২) শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে এবং এর জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়তে হবে। কারণ, খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কুপ্রভাবে হয়ে থাকে।
৩) ঘুম ভাঙার পর বাঁ দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করতে হবে। এটা করতে হবে শয়তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও তার চক্রান্তেকে অপমান করার জন্য।
৪) যে দিক ফিরে দুঃস্বপ্ন দেখেছে তা পরিবর্তন করে অন্য দিক ফিরে ঘুমাতে হবে। অবস্থাকে বদলে দেয়ার ইঙ্গিত স্বরুপ এটা করতে বলা হয়েছে।
৫) খারাপ স্বপ্ন দেখলে কারো কাছে বরা যাবে না। আর নিজেও এর ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
স্বপ্ন বিষয়ক আরেকটি হাদিস: হাদিসে এসেছে, রাসূল (সাঃ) এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে দেখেছি, আমার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে। এ কথা শুনে রাসূল (সাঃ) হেসে ফেললেন। আর বললেন, ঘুমের মধ্যে শয়তান তোমাদের কারো সাথে যদি দুষ্টুমি করে, তবে তা মানুষের কাছে বলবে না। (মুসলিম শরীফ)।
হাদিস থেকে আমরা জানতে পারলাম, সাহাবীগণ কোনো স্বপ্ন দেখলে রাসূল (সাঃ) এর কাছে তার ব্যাখ্যা জানতে চাইতেন। তারা এভাবে কোনো স্বপ্নকে অযথা মনে না করে এর গুরুত্ব দিতেন। তবে, রাসূল (সাঃ) এসব স্বপ্ন অন্যের সামনে বলাকে অপছন্দ করতেন।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সঠিক ভাবে ইসলাম বুঝার এবং সে অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুক, আমিন।

0 Comments